মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. আব্দুল মান্নান বলেন, একটি মামলা সত্য হোক মিথ্যা হোক, একজন বাদি মামলা করলে সেই মামলাটার আসামী হতেই পারে। কিন্তু যে মামলায় তদন্ত হয়নি এখনও, যে মামলায় কোন চার্জসীট হয়নি, সেই মামলায় কেন মহম্মদপুরের প্রশাসন, কেন মাগুরার পুলিশ প্রশাসন হন্ন হয়ে তাকে খুঁজছে এর পেছনের কারণ কি? এটা মহম্মদপুরের আওয়ামীলীগ জানতে চায় মহম্মদপুরের প্রশাসন তথা মাগুরার পুলিশ প্রশাসনের কাছে। বৃহস্পতিবার বেথুলিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামীলীগের এক সভায় এ্যাড. আব্দুল মান্নান এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের বিরুদ্ধে করা চাঁদাবাজি মামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওই সভাপতি বলেন, এ মামলাটি একটি মিথ্যা মামলা । স্থানীয়ভাবে তার কিছু প্রতিপক্ষরা প্রশাসনকে প্রভাবিত করে এই মিথ্যা মামলাটি করে যেমনি করে লিটন সাহেবের ক্ষতি করেছে, তেমনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নহাটা ইউনিয়নে ধর্ষণের ঘটনায় অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী। বিচারের আশায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের কাছে যায় ভুক্তভোগী পরিবার। তার কাছে বিষয়টি নিয়ে সুরাহা না হলে মামলার প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই নেতা মারধর করে গ্রাম্য সালিশের কথা বলে । পরে সেসহ তার সহযোগিরা ১০জুলাই সালিশে ভুক্তভোগী পরিবারকেই উল্টো দোষী সাব্যস্ত করেন। তারা ওই পরিবারকে ১ লাখ ২৫হাজার টাকা জরিমানা এবং ৬মাসের জন্য সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত দেয় । তাছাড়া পরিবারটিকে পুলিশের কাছে না যাওয়ার হুমকি দেন।
উল্টো সিদ্ধান্ত দেওয়ায় ভুক্তভোগী ওই পরিবার মাগুরা সদর থানার ভাংগুরা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল ইসলাম (১৯) এর বিরুদ্ধে ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলা করে। পরে পুলিশ শাহাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করলে সালিশকারীরা ওই পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত সোমবার সকালে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমানে নেতৃত্বে কয়েকজন ভুক্তভুগীদের বাড়িতে যায়। তারা বাড়ি থেকে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি ভ্যান, শ্যালো মেশিনসহ বেশ কিছু জিনস ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া অধিকাংশ মালামাল উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে জানিয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তারক বিশ্বাস জানান, ওই মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন, ওবায়দুর রহমানসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আরো একটি চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে। যার আরো ১৪জন আসামী রয়েছে। ধর্ষণ মামলায় ১ জন এবং চাঁদাবাজি মামলায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
তবে মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন এবং তার সহযোগি ওবায়দুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের কোন সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম না। আর চাঁদা দাবির প্রশ্নই ওঠে না। আমি উল্টো তাদের সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
বি/কে, মাগুরা নিউজ টুডে।
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন