বিয়ের দাবী ৪ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ি অনশন করছেন প্রেমিকা মায়া (১৮) নামের একটি মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা সদরের জগদল ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে ।
সরজমিন সদরের লক্ষীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, এই গ্রামের ইদ্রিস বিশ্বাসের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে দিনরাত অনশন করে চলেছে একই গ্রামের জাকির মিয়ার মেয়ে মায়া। অনশনরত বাড়িতে থাকাকালীন ছেলের বাড়ির পক্ষ থেকে মেয়েটিকে নানা রকম অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবর্তা বললেও মেয়েটি তার দাবী ছাড়তে নারাজ ।
অনশনরত মেয়েটি মায়া কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলেন, আমাদের গ্রামের ইদ্রিস বিশ্বাসের ছেলে ইব্রাহিমের সাথে তার ৫ বছর প্রেমের সর্ম্পক চলছে। সে আমাকে বিয়ে করবে বলে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। বর্তমানে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে রংপুরে চাকুরি করে। চাকুরি পাওয়ার আগে থেকেই সে আমাদের পরিবারের সাথে সর্ম্পক গড়ে তোলে। তার সুবাদে আমার মায়ের নিকট থেকে প্রথমে ৪৯ হাজার ৫শ’ টাকা নেয়। চাকুরি থেকে আসলে আামাদের বাড়িতে আসে। আমার মায়ের নিকট বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় ৫ হাজার ১০ টাকা নেয়। এমনি ভাবে তার কাছে আমাদের প্রায় ৯৬ হাজার পাওনা রয়েছে। পরবতীতে সে আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারিরীক সর্ম্পক গড়ে তোলে। আমি তাকে নানা ভাবে বিয়ে করার পরামর্শ দিলে সে নানা ভাবে আমাকে ছলচুতরি করতে থাকে। পরে আমি জানতে পারি তার মতেই তার পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখছে। এ সব শোনার পর আমি নিজে জুলাই মাসের প্রথমে আত্মহত্যার পথ বেছে নি। তারপর অসুস্থ হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। পরে আমার পরিবার আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এখন আমি বিয়ের দাবীতে এখানে ৪ দিন অবস্থান করছি।
ছেলের বাবা ইদ্রিস বিশ্বাস বলেন, মেয়েটির সাথে আমার ছেলের সর্ম্পকের কথা আমরা জানি না। আমার ছেলে কোনদিন আমাদের কাছে তাকে বিয়ের কথা বলেনি। আমি মেয়েটিকে চিনি। সে আমাদের গ্রামের জাকির মিয়ার মেয়ে। আমার ছেলে এ বিয়েতে রাজী নয়। সে অন্যত্র বিয়ে করার জন্য আমাদের পরিবারে প্রস্তাব দিয়েছে। তাই আমরা তার বিয়ের জন্য অন্যত্র বিয়ে দেখার চেষ্টার ছিলাম এরই মুহুতে মেয়েটি আমাদের বাড়িতে এসে জামেলায় ফেলে দিয়েছে। আমার ছেলে বাড়িতে নেই। সে আসলে তার সাথে বসে মিমাংসা হবে।
মেয়ের মাতা নার্গিস আক্তার বলেন, এক মাস আগে আমার মেয়ের একটি বিয়ে ঠিক হয় ।বিয়ের সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে এমন কথা শুনে আমার মেয়ের প্রেমিক ইব্রাহিম ও তার মা আমাদের বাড়ীতে এসে তার সাথে বিয়ের কথা বলে। তার ছেলে আমার মেয়েকে ছাড়া বাঁচবে না এ কথা বলে। আমাকে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে বলে। তারা আমাকে তার ছেলের সাথে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে আমি আমার মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। তারপর তারা বিয়ে নিয়ে আমার মেয়ের সাথে নানা রকম ছল চাতুরি করে। এ কথার শুনে আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়। অনেক কষ্টে তাকে বাচাঁয়। বর্তমানে কষ্ট সহ্য না করতে পেরে বিয়ের দাবী নিয়ে আমার মেয়ে তাদের বাড়িতে অবস্থান করছে।
জগদল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রবিউল ইসলাম বলেন, আমার চেয়ারম্যান করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সে বর্তমানে অসুস্থ। আমি তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। উভয়পক্ষ থেকে এখনো কোন সালিশ হয়নি। এ বিষয়ে গ্রামের কিছু মানুষের সাথে বসে আমি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাব।
বি/কে, মাগুরা নিউজ টুডে।